
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপ চাপায় ৫ ভাইয়ের মৃত্যুর ১৪ দিন অচেতন থাকা পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরেক ভাই রক্তিম সুশীল (৩৫)
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনি মারা যান। এনিয়ে একই পরিবারের ৬ ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে চকরিয়া মালুমঘাটে প্রয়াত বাবা সুরেশ চন্দ্রের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে গিয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় রক্তিম সুশীল, অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্মরণ সুশীল নিহত হন। একই দুর্ঘটনায় আহত রক্তিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার নিহত ৫ ভাইদের স্মরণে বাড়িতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান হয়। ১৫ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে হেরে গেলেন রক্তিম সুশীল। অপর আহত বোন হীরা শীল এখনো মালমুঘাট মেমোরিয়াল খ্রীস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় রক্তিমের ছোট ভাই প্লাবন সুশীল (২৪) বাদী হয়ে পিকআপ চালককে আসামি করে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে র্যাব-১৫ এর একটি দল ঢাকা থেকে চালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন। তাকে আটকের পর র্যাব জানায়, ঘটনার দিন রাস্তায় অতিরিক্ত কুয়াশা থাকা সত্ত্বেও চালক দ্রুত কক্সবাজার পৌঁছে সবজি ডেলিভারি দিতে বেপরোয়াভাবে পিকআপটি চালাচ্ছিলেন। ঘন কুয়াশা ও অতিরিক্ত গতির কারণে মালুমঘাট বাজারের নার্সারি গেটের সামনে রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারতদের দূর থেকে খেয়াল করেননি তিনি। গাড়ি অতিরিক্ত গতিতে থাকায় কাছাকাছি এসে লক্ষ্য করলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এতে এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তিম সুশীলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে চকরিয়ায় নামে শোকের ছায়া। তার শিশু সন্তান ঋদ্বি সুশীল, স্ত্রী সুমনা শর্মা, মা মৃণালীনি সুশীল প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। রাতেই তার মৃত বাড়িতে আনলে শেষবারের জন্য দেখতে এলাকাবাসী ছুটে আসে মালুমঘাট হাসিনাপাড়াস্থ রক্তিম সুশীলের বাড়িতে।
রক্তিম সুশীলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর নিহতের বাড়িতে গিয়ে পরিবার ও মা মৃণালীনি বালা সুশীলকে শান্তনা দেন। এসময় তিনি যাবতীয় সহায়তা দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।