প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
চাইনিজ নববর্ষে চীন কে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার দাবিতে কক্সবাজারে এক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের শৈবাল পয়েন্টস্থ বাহারছড়া এলাকায় ও সদরের পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পৃথকভাবে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
চীনে ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে চাইনিজ নববর্ষ বা লুনার নিউ ইয়ার ২০২৩। এ বছর চাইনিজ লুনার নিউ ইয়ারের প্রতীক খরগোশ। তাই খরগোশ, ড্রাগনসহ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার আহবান জানিয়ে তরুণরা সোলার প্যানেল, টারবাইন ও রিনিউয়েবল এনার্জি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে স্লোগান যুক্ত ব্যানার নিয়ে সড়কে শোভাযাত্রা করেন।
চাইনিজ নববর্ষ উপলক্ষে উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), পরিবেশ ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ক্যান কক্সবাজার এবং ঋণ ও উন্নয়ন বিষয়ক এশীয় জন-আন্দোলনের (এপিএমডিডি) যৌথ উদ্যোগে এ আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে কক্সবাজারের পরিবেশকর্মী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় তরুণরা বলেন, চীন শুধু বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্রই নয়, বরং বাংলাদেশের উন্নয়নে বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া চীন পৃথিবীর সবথেকে বড় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাতা দেশও বটে। গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীনা কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে জানায় যে, বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুতের মতো বায়ুদূষণকারী খাতে আর কোনো বিনিয়োগ করবে না। এছাড়াও ২০২১ সেপ্টেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বহির্বিশ্বে নতুন কোনো কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি না করার ঘোষণা দেন। কিন্তু চীনা ব্যাংক ও কোম্পানিগুলো এখনও পটুয়াখালীর পায়রায় আরো একটি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য অর্থায়ন করবে বলে জানা গেছে।
কর্মসূচিতে উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন)– এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী বলেন, বাংলাদেশে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে যা দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই চীনের উচিৎ উন্নত মানের প্রযুক্তি ও অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্জনের পথে সাহায্য করা। ইতোমধ্যে ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ সরকার মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চীনের সহায়তা পেলে সরকার খুব দ্রুত এ পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে।
কক্সবাজারের পরিবেশ ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ক্যান-এর নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, কয়লাবিদ্যুতের ফলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যহানি ও পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এছাড়া আমদানিকৃত কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই এ খাতে চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই, চীনের উচিৎ প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি অমান্য করে কয়লা খাত থেকে সব ধরনের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা।
চীন এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ দাতা চীন। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ জেলায় একটি ৬৮ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। এ জন্য চাইনিজ নববর্ষের দিনে চীন কে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য পরিবেশ কর্মী ও শিক্ষার্থীরা আহ্বান জানান।
বার্তা প্রেরক
ওমর ফারুক
নির্বাহী পরিচালক
উ ক্যান
মুঠোফোনঃ ০১৭০৪৮৭৮৪৪৮